Time & Date:: 09:07:34 AM Sunday 13-04-2025
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

কোর’আন ও হাদিস অনুযায়ী বিদ’আত


ইসলামে মহান আল্লাহপাক ও তার শেষ নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) যে সকল কাজ কখনো করেনি, করতে বলেনি অথচ আমরা বেশী ভালো বুঝে করি, সেটাই বিদ’আত। এককথায়, ধর্মে অতি বাড়াবাড়ি, সংযোজন, বিয়োজন ইত্যাদি করাই হলো বিদ’আত।

বিদ’আত শব্দের আভিধানিক অর্থঃ পূর্ববর্তী কোনো নমূনা ছারাই নতুন আবিষ্কৃত বিষয়। (আন নিহায়াহ, পৃঃ ৬৯; কাওয়ায়েদ মা’রিফাতিল বিদ’আহ, পৃঃ ১৭)

বিদ’আত শব্দের পারিভাষিক অর্থঃ ধর্মের মধ্যে যে নব আবিষ্কৃত ইবাদত, বিশ্বাস ও কথার সমর্থনে কোর’আন ও সুন্নাহর মধ্যে কোনো দলীল মিলে না অথচ তা সওয়াবের উদ্দেশ্যে করা হয় তাকেই বিদ’আত বলা হয়।

এমন অনেকের সাক্ষাৎ পাবেন যারা ইসলামি চেতনায় সমৃদ্ধ। কিন্তু বলেন, বিদ’আতের বিরোধীতায় এত বাড়াবাড়ির কি দরকার? কেউ একটু মিলাদ পড়লে, নামাজের শেষে সম্মিলিতভাবে দোয়া করলে, কুলখানি বা চল্লিশা চেহলাম পালন কিংবা এ জাতীয় কিছু করলে দ্বীন ইসলামের কি এমন ক্ষতি হয়ে যায়? আর এটা তো ভালো পথই মনে হচ্ছে। এটাতে তো সওয়াব থাকার কথা। আমাদের পূর্বপুরুষরাও তো করে আসছে, তাহলে আমরাই বা করবো না কেন? আর অধিকাংশ লোককেই তো করতে দেখি ইত্যাদি। মনে রাখবেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও তার সাহাবীগণ, তাবে তাবেয়ীগণ যা করেন নি, তা আমরাও করতে পারিনা।

আল্লাহপাক বলেন,
وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الْأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۚ إِن يَتَّبِعُونَ إِلَّا الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلَّا يَخْرُصُونَ
“আর যদি আপনি পৃথীবির অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে” (সুরা আন’আম, ১১৬)।

মদীনার প্রখ্যাত ইমাম মালেক (রঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলামের কোনো বিদ’আত প্রচলন করে একে নেকীর কাজ বলে মনে করে সে নিশ্চয়ই ধারণা করে নিয়েছে, নবী করীম (সাঃ) রিসালাত ও নবুওয়াতের দায়িত্ব পালনের আমানতে খিয়ানত করেছেন। যেহেতু তিনি এ নেকীর কাজ সম্পর্কে বলে যেতে পারেননি। রাসুল (সাঃ) এর প্রতি মহব্বতের নামে তার শিক্ষার বিপরীত কাজ কখনো ইবাদত বা নেকীর কাজ নয়। আর এতে মহব্বতও হয়না। রাসুল (সাঃ)-কে ভালোবাসা মানে তিনি যা করতে বলেছেন তাই করা; এর বেশিও না কমও না।

ইবরাহীম ইবনে মায়সারা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো বিদ’আতিকে সম্মান করলো, সে নিশ্চয়ই ইসলামকে ধ্বংস করার কাজে সাহায্য করলো।

শিরক ও বিদ’আত প্রায় একই ধরণের অপরাধ। তাওহীদের বিপরীত যেমন শিরক তেমনি সুন্নাতের বিপরীত হলো বিদ’আত। আর বিদ’আতি কর্মকান্ডে ভরে গেছে আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ। বিদ’আতের চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে ইবাদত।

বিদ’আতের প্রকারভেদঃ অনেকেই বিদ’আতকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। ক) বিদ’আতে হাসানাহ বা ভালো বিদ’আত ও খ)বিদ’আতে সাইয়্যেহাহ বা মন্দ বিদ’আত। কিন্তু মনে রাখবেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক বিদ’আতই পথভ্রষ্টতা” (মুসলিম, ইবনে মাজাহ)। কাজেই ভালো বিদ’আত, মন্দ বিদ’আত বলে ইসলামে কিছু নেই।

Facebook Comment