বর্তমান যুগে আল্লাহতায়ালা দাওয়াতি কাজকে আমাদের জন্য অনেক সহজ পরে দিয়েছেন। আমাদের পূর্বেকার লোকদের জন্য এতটা সহজ ছিলো না। আজকের যুগে ইসলাম প্রচার, দাওয়াতি কাজ পরিচালনা ও মানুষের কাছে দলীল প্রমাণ উপস্থাপন অনেক দিক দিয়েই সহজ। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে দাওয়াত ও প্রচারকর্ম আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। অতএব, জ্ঞানবান ঈমানদার ব্যক্তিবর্গ ও নায়েবে রাসুলদের ওপর অবশ্য কর্তব্য, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে একাজে আত্মনিয়োগ করা, পরস্পর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর বার্তা তার বান্দাদের নিকট পৌছে দেয়া। এ মহৎ কাজে জড়িত হলে চারদিক থেকে অসহযোগীতা, বাঁধা ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপের সম্মুখীন হতে হবে। এসব আমলে না নিয়ে নির্ভয়ে সম্মূখপানে এগিয়ে যেতে হবে।
রাসুলুল্লাহর (সাঃ) সময় দাওয়াতের সূচনা
হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ের পথনির্দেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংক্ষিপ্ত বাণীতে
সমম্বিত ছিলো স্বচ্ছ ঝরঝরা, অত্যন্ত মিষ্টি মধূর, অতিশয় প্রভাব বিস্তারকারী এবং
যাদের লক্ষ্য করে তা বলা হচ্ছিলো তাদের রুচি অনুযায়ী উন্নত সাহিত্যিক ভূষণে
সজ্জিত। ফলে তা শ্রোতাদের হৃদয়মনে তীর শলাকার মতো বিদ্ধ হতো; সুমধূর ভাব
সামঞ্জস্যের কারণে লোকেরা আত্মহারা হয়ে তা উচ্চারণ ও আবৃত্তি করতে শুরু করতো।
সর্বোপরি তাতে স্থানীয় ভাবধারার বিশেষ প্রভাব বিদ্যমান ছিলো। যদিও আলোচনা করা হতো
চিরন্তন সত্যের কিন্তু তার সত্যতা প্রমাণের জন্যে যুক্তি প্রমাণ, সাক্ষ্য ও উদাহরণ
গৃহীত হতো নিকটস্থ পারিপার্শিক সমাজ থেকেই, যেসবের সাথে শ্রোতামন্ডলীর ছিলো নিগুঢ়
পরিচিতি। তাদেরই ইতিহাস, তাদের জাতীয় ঐতিহ্য, তাদেরই দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণাধীন
নিদর্শনসমূহ ও তাদেরই আকিদা বিশ্বাস, নৈতিক চরিত্র এবং সামাজিক ত্রুটি বিচ্যুতি
সম্পর্কে তাতে আলোচনা হতো। যাতে করে তারা এর দ্বারা তীব্রভাবে প্রভাবিত হয়। (এর
মধ্যে তিন বছর ছিলো গোপন দাওয়াতের পর্যায়)। এ অধ্যায় নবী করীম (সাঃ)-এর দাওয়াতের
প্রতিক্রিয়া তিনভাবে প্রকাশিত হয়ঃ
১। কতিপয় সৎ ও সত্যপন্থী লোক এ দাওয়াত কবুল
করে মুসলিম উম্মায় সংঘবদ্ধ হবার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।
২। একটা বিরাট সংখ্যক লোক মূর্খতা,
স্বার্থপরতা অথবা বংশানুক্রমিক পূর্বপুরুষের প্রচলিত প্রথার অন্ধ প্রেমে মশগুল হয়ে
তার বিরোধীতা করতে বদ্ধপরিকর হয়।
৩। কুরাইশ ও মক্কার পরিসীমা অতিক্রম করে এ
নতুন দাওয়াতের আওয়াজ অপেক্ষাকৃত বিশাল ক্ষেত্রে পদার্পণ করে।
এরপর থেকেই শুরু হয় এ দাওয়াতের দ্বিতীয়
অধ্যায়। এ অধ্যায়ে ইসলামি দাওয়াতের সাথে প্রাচীন জাহেলিয়্যাতের এক তীব্র
প্রাণান্তকর দ্বন্দ্বের সূচনা হয়, যার জের আট নয় বছরকাল পর্যন্ত চলতে থাকে। শুধু
মক্কাতে নয়, শুধু কুরাইশ গোত্রে নয়, আরবের অধিকাংশ অঞ্চলেই প্রাচীন জাহেলিয়্যাতের
সমর্থকরা এ দাওয়াতকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করে। এ দাওয়াতকে
নিস্তেজ ও নিস্তনাবুদ করে দেওয়ার জন্য তারা সর্বোতভাবে চেষ্টা করতে শুরু করে।
মিথ্যা অভিযোগ, অপবাদ, দোষারোপ, সন্দেহ সংশয় ও নানাবিধ কূট প্রশ্নের তীব্র আক্রমণ
চালাতে থাকে। জনগণের অন্তরে নানা প্রকার প্রচারণা ও প্ররোচণা সৃষ্টি করতে থাকে।
অপরিচিত লোকদেরকে নবী করীম (সাঃ)-এর কথা শোনা থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করে। নতুন
ইসলাম গ্রহণকারীদের উপর চরম পাশবিক অত্যাচার নির্যাতন চালাতে থাকে। অর্থনৈতিক ও
সামাজিক ক্ষেত্রে তাদের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে। এভাবে তাদের উপর এত
অবর্ণনীয় নির্যাতন নিষ্পেষণ চালানো হয় যে, তাদের অনেক লোকই নিজেদের ঘরবাড়ি
পরিত্যাগ করে দু’ দুবার হাবশায় হিজরত করতে বাধ্য হয় এবং শেষ পর্যন্ত তৃতীয়বার
তাদের সকল্কে মদীনায় হিজরত করতে হয়। কিন্তু তীব্র বিরোধীতা ও ক্রমবর্ধমান
প্রতিবন্ধকতা সত্বেও এ দাওয়াত ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হতে থাকে। মক্কায় এমন কোন
বংশ ও পরিবার ছিলনা যেখান থেকে অন্তত এক ব্যক্তিও ইসলাম গ্রহণ করেনি। ইসলামের
অধিকাংশ দূশমনের কঠিন দূশমনির কারণ এই ছিল যে, তাদের নিজেদেরই ভাই, ভাতিজা, পুত্র,
জামাই, কণ্যা, বোন ও ভগ্নীপতি ইসলামি দাওয়াত শুধু কবুলই করেনি বরং তারা ইসলামের
আত্মোতসর্গী, সাহায্যকারী হয়ে গিয়েছিলো। তাদের নিজেদের কলিজার টুকরো সন্তানরাই
তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামী হয়ে উঠেছিলো। সর্বোপরি মজার ব্যাপার ছিল যে, যারাই
প্রাচীন জাহেলিয়্যাতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এই নতুন মিশনে যোগদান করেছিলো,
তারাই জাহেলি সমাজে সর্বাপেক্ষা উত্তম লোক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। আর এ
আন্দোলনে যোগদানের ফলে তারা এত বেশি সৎ, সত্যপন্থী ও পবিত্র নৈতিক চরিত্রের
অধিকারী হয়ে উঠেছিলো যে এ বিপ্লবী কাজটাই বিশ্ববাসীর দৃষ্টিতে এ আন্দোলনের
শ্রেষ্ঠত্ব ও বিশিষ্টতা সুস্পষ্ট করে তুললো। এ সুদীর্ঘ ও কঠিন দ্বন্দ্ব সংরাম
চলাকালে আল্লাহতায়ালা সময় সুযোগ ও প্রয়োজনমতো তার নবীর প্রতি এমন সব আবেগময়ী ভাষণ
নাজিল করতে থাকেন, যেগুলোতে বর্তমান ছিলো দরিয়ার উচ্ছ্বসিত শ্রোতবেগ, সয়লাবের
দুর্নিবার শক্তি আর আগুনের তীক্ষ্ণ তেজস্বীতা। এসব ভাষণে একদিকে ঈমানদারদেরকে
তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহের কথা বলে দেয়া হয়। তাদের মধ্যে জামা’আতবদ্ধ
জিন্দেগির চেতনা পয়দা করা হয় এবং তাদেরকে তাকওয়া, চারিত্রিক মাহাত্ম্য, পবিত্র
স্বভাব ও পবিত্র জীবনযাপনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সত্য দ্বীন প্রচারের কর্মপন্থা
তাদেরকে শিখিয়ে দেয়া হয়। সাফল্যের ওয়াদা ও জান্নাতের সুসংবাদ দ্বারা তাদের সাহস
যোগানো হয়। ধৈর্য্য, দৃঢ়তা ও উচ্চ সাহসীকতার সাথে আল্লাহর পথে জেহাদ ও সংগ্রাম
করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। ত্যাগ, কোরবানী ও আত্মোতসর্গের এমন দুর্বার জজবা তাদের
মধ্যে সৃষ্টি করে দেয়া হয় যে, যাবতীয় বিপদ মুসিবত ও বিরুদ্ধতার গগণচুম্বী
তরঙ্গমালার সঙ্গে মুকাবিলা করার জন্যে তারা তৈরি হয়ে যায়। অন্যদিকে বিরুদ্ধবাদী,
সত্যবিমুখ ও গাফিলতের ঘুমোঘোরে নিমজ্জিত লোকদের সেসব জাতির ভয়াবহ পরিণতির কথা
উল্লেখ করে সতর্ক করা হয়, যাদের ইতিহাস সম্পর্কে তাদের ভালোভাবে জানা ছিলো। দিনরাত
যেসব ধ্বংসাবশেষ অঞ্চলের উপর দিয়ে তারা যাতায়াত করতো সেসব নিদর্শনের উল্লেখ করে
তাদেরকে উপদেশ দেয়া হয়। আসমান ও জমিনের যেসব সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী দিনরাত চোখের
সামনে প্রতিভাত হতো, যেগুলো তাদের জিন্দেগিতে প্রতিটি মুহুর্তে অবলোকন করতো ও
অনুভব করতো, সেসব নিদর্শনাবলী দ্বারাই তৌহিদ ও আখিরাতের প্রমাণ পেশ করা হয়। শিরক,
স্বেচ্ছাচারিতা, পরকালের প্রতি অস্বীকৃতি এবং পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণের
ভ্রান্তি, মনমগজে প্রভাব বিস্তারকারী সুস্পষ্ট দলীল ও যুক্তি দ্বারা প্রমাণ করা
হয়। অতঃপর তাদের যাবতীয় সন্দেহ সংশয় বিদূরিত করা হয়। তাদের প্রতিটি প্রশ্নের
যুক্তিসঙ্গত জবাব দেয়া হয়। যেসব জটিল সমস্যায় মন জর্জরিত ছিলো অথবা অন্যদের মঙ্কে
সংশায়িত করছিলো সেগুলোর সুস্পষ্ট সমাধান পেশ করা হয়। চতুর্দিক থেকে অন্ধ
জাহেলিয়্যাতকে এমনভাবে অবরুদ্ধ করা হয় যে, বুদ্ধি ও বিবেকের জগতে অবস্থানের জন্যে
তাদের বিন্দু পরিমাণ স্থান থাকেনি। এর সাথে তাদেরকে আল্লাহর গজব ও অভিশাপ,
কিয়ামতের ভয়ংকর রুপ এবং জাহান্নামের কঠিন আজাব সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করা হয়। তাদের
খারাপ চরিত্র, ভ্রান্ত জীবনযাপন পদ্ধতি, জাহেলি রসম রেওয়াজ, সত্য বিরোধিতা এবং
মুমিনদেরকে নির্যাতনের কারণে তাদেরকে ভর্তসনা ও তিরষ্কার করা হয়। নৈতিক চরিত্র ও
সমাজব্যবস্থার যেসব বড় বড় মূলনীতি আল্লাহর মনোনীত সত্যভিত্তিক সভ্যতার ভিত্তি
সেগুলো বিস্তারিতভাবে তাদের সামনে পেশ করে দেয়া হয়।
এ অধ্যায়টি এককভাবে বিভিন্ন মঞ্জিল দ্বারা
সমম্বিত, যার প্রতিটি মনজিলেই দাওয়াতি কাজ অত্যন্ত ব্যাপক ও প্রশস্ত হয়ে উঠে।
চেষ্টা সাধনা এবং বিরুদ্ধতাও তীব্রতর হতে থাকে। আন্দোলন বিভিন্ন মতাবলম্বী ও
পরস্পর বিরোধী কর্মততপর অসংখ্য দল উপদলের সম্মুখিন হয়। তদানুযায়ী আল্লাহর পক্ষ
থেকে আগত বাণীসমূহের বিষয় বৈচিত্রও ব্যাপকতর হতে থাকে। ইসলামি দাওয়াতের এ বিরাট
দায়িত্ব পালনের জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যে বিস্তারিত পথনির্দেশ
প্রদান করা হয় তার প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে সহজেই বুঝতে পারা যায় যে, মক্কার ঘোর
বিরধিতার যুগে কোন মহান চারিত্রিক শক্তি সম্মুখে অগ্রসর হবার প্তহ পরিষ্কার করে
এবং কোন প্রভাবশালী এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী লোকদেরকে সকল শক্তির সাথে টক্কর
লাগাতে এবং সকল মুসিবত অকাতরে সহ্য করতে উদ্বুদ্ধ করে।
একজন মুসলমানের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো,
সার্বিক জীবনে সফলতার জন্য তার কোর’আন হাদিস অনুসরণ করাই যথেষ্ট। দাওয়াতের দিকটিও
এর বাইরে নয়। দাওয়াতি ময়দানে সফল হতে হলে কি প্রক্রিয়ায় কাজ করতে হবে, সে সম্পর্কে
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোর’আনে বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদিসেও এ
বিষয়টি এসেছে সুস্পষ্টভাবে।
আল্লাহতায়ালা খুব স্পষ্ট করে বলেছেন,
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ
بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ
وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ
“তুমি তোমার রবের প্রতি আহ্বান করো হিকমত ও
সদুপদেশের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করো সুন্দরতম পন্থায়” (আন নাহল, ১২৫)।
দাওয়াত পদ্ধতি কি হবে এবং একজন দাওয়াত
কর্মীকে কি কি গুণ অর্জন করতে হবে যা সে দাওয়াতি ময়দানে প্রয়োগ করবে উপরোক্ত আয়াতে
আল্লাহ স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। সে দাওয়াত শুরু করবে হিকমত ও পরিবেশ পরিস্থিতির
বিবেচনায় বিভিন্ন কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে। এখানে হিকমত বলতে বোঝানো হয়েছে সুস্পষ্ট
দলিল প্রমাণসমূহ যা স্বচ্ছ ও সন্তোষজনক পন্থায় হক প্রতিষ্ঠিত করবে এবং অসার ও
বাতুলতাকে খন্ডন করবে।
আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রঃ) উক্ত আয়াতের
ব্যাখা করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহতায়ালা মানুষের অবস্থা ভেদে দাওয়াতের স্তর বিন্যাস
করে তা তিন ভাগে ভাগ করেছেন।
১। যদি ব্যক্তি হক অম্বেষণকারী ও তার প্রতি
শ্রদ্ধাশীল হয় এবং হক পেলে সাথে সাথে তা অন্য যেকোন মতবাদের উপর প্রাধান্য দেয়,
তাহলে তাকে শুধু হিকমতের মাধ্যমে দাওয়াত দেয়া হবে। তার জন্য ওয়াজ নসিহত ও বিতর্কে
যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
২। আর যদি সে হকের বিপরীতে নিমগ্ন থাকে,
কিন্তু হক চিনতে পারলে তা গ্রহণ করবে বলে আশা থাকে, তাহলে আশা ও ভয় দেখিয়ে নসিহত
করতে হবে।
৩। অপরদিকে যে ব্যক্তি হকের বিরোধিতা করে
এবং এর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী তাকে উত্তম পন্থায় যুক্তি প্রমাণ পেশ করে দাওয়াত
দিতে হবে। যদি ফিরে আসে তো ভালো। তা নাহলে সে ইসলাম বিরোধী বলে গণ্য হবে।
তাই দাঈ ইলাল্লাহ-এর দায়িত্ব হচ্ছে, আল্লাহর
দিকে আহ্বানের এ গুরুদায়িত্ব পালনকালে হিকমতের পথ অবলম্বন করা এবং দাওয়াত কর্ম
হিকমত দিয়েই শুরু করা, এর প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া। যদি দাওয়াত প্রদত্ত ব্যক্তির
মাঝে কোনো সংকীর্ণতা বা আপত্তি থাকে তাহলে উত্তম উপদেশের স্মরণাপন্ন হওয়া, উৎসাহ
ব্যঞ্জক পবিত্র আয়াত ও হাদিসের উপদেশ দ্বারা দাওয়াত পেশ করা। যদি কাঙ্ক্ষিত
ব্যক্তি সন্দিহান হয়, তাহলে উত্তম পন্থায় বিতর্কের রাস্তা গ্রহণ করা এবং কাঙ্ক্ষিত
পর্যায়ে পৌছার নিমিত্তে ধৈর্য্যধারণ করা। তাড়াহুড়ো বা বল প্রয়োগ কিংবা রূঢ় আচরণের
চিন্তা পরিহার করা। বরং সন্দেহ নিরসনের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে প্রচেষ্টা
চালিয়ে চাওয়া। দলীলাদি উপস্থাপন করতে হবে উত্তম পদ্ধতিতে। হকের মাধ্যমে নিজে উপকৃত
হওয়া, হক হক গ্রহণ করা এবং হকের দ্বারা কোন ব্যক্তিকে প্রভাবিত করা ও বিতর্ক
আলোচনায় সন্তুষ্ট করে তাকে হক গ্রহণে উৎসাহী করার এটিই সহজ উপায়।