Time & Date::
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

তাবলীগ কি ও কেন করতে হবে?



তাবলীগঃ তাবলীগ শব্দের অর্থ হলো প্রচার করা। সাধারণভাবে দ্বীন প্রচার করাকেই তাবলীগ বলে এবং যিনি দ্বীন প্রচার করেন অর্থাৎ তাবলীগের কাজ করেন তাকে মুবাল্লিগ বা দ্বীন প্রচারক বা দাঈ বলে।

আল্লাহপাক কোর’আনে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাকো এবং অবশ্যই মুসলমান নাহয়ে মৃত্যুবরণ করোনা” (আল ইমরান, ১০২)।

আল্লাহপাক পরিষ্কারভাবে বলেন,
وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
“আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিৎ যারা আহ্বান জানাবে সতকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভালো কাজের এবং নিষেধ করবে অন্যায় কাজের, আর তারাই হলো সফলকাম” (আল ইমরান, ১০৪)

তাবলীগ সম্পর্কে আল্লাহপাক পবিত্র কোর’আন শরীফে ইরশাদ করেছেন,
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ
“তোমরাই [রাসুল (সাঃ)-এর] শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্যেই তোমাদেরকে উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাঁধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে” (আল ইমরান, ১১০)

আল্লাহ আরও বলেন,
ادْعُ إِلَىٰ سَبِيلِ رَبِّكَ بِالْحِكْمَةِ وَالْمَوْعِظَةِ الْحَسَنَةِ ۖ وَجَادِلْهُم بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ ۖ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
“আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহ্বান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উত্তমরূপে উপদেশ শুনিয়ে এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দযুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্ক্র বিশেষভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তার প্তহ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভালো জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে” (আন নাহল, ১২৫)।

আল্লাহপাক দ্বীন পৌছে দেওয়ার জন্য বলেন,
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ۖ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ
“হে রাসুল! পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি এরুপ আপনি না করেন, তবে আপনি তার পয়গাম কিছুই পৌছালেন না” (আল মায়িদাহ, ৬৭)।

পৃথিবীর সকল আলেমদের মতে এখানে যা অবতীর্ণ হয়েছে বলতে কোর’আন ও সহিহ হাদিসকে বোঝানো হয়েছে। যদি নবী করীম (সাঃ) কোর’আন বাদ দিয়ে অন্তর বা মনের খেয়ালখুশির অনুসরণ করতেন তাহলে কি হতো? দেখুন নবীজীকে (সাঃ) আল্লাহপাক কি বলছেন,
وَكَذَٰلِكَ أَنزَلْنَاهُ حُكْمًا عَرَبِيًّا ۚ وَلَئِنِ اتَّبَعْتَ أَهْوَاءَهُم بَعْدَمَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا وَاقٍ
“এমনিভাবেই আমি এ কোর’আনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। যদি আপনি প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌছার পর, তবে আল্লাহর কবল থেকে আপনার না কোনো সাহায্যকারী আছে এবং না কোনো রক্ষাকারী” (সুরা রাদ, ৩৭)।

হে মানুষ! চিন্তা করুন স্বয়ং নবীকে কতবড় হুশিয়ারী। যদি মনোবাসনা বা খেয়ালখুশি মতো প্রবৃত্তির অনুসরণ করতেন তো আল্লাহর আযাব ওনাকেও ঘিরে ধরতো।

উপরোক্ত আয়াত শরীফগুলোর মাধ্যমে আল্লাহপাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের নির্দেশ দান করেছেন যে, উম্মতের মধ্যে একটি জামা’আত বিশেষভাবে এই কাজের জন্য থাকতে হবে যারা ইসলামের দিকে লোকদেরকে তাবলীগ করবে। তাবলীগ করা তথা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের কথা বলেছেন। রাসুল (সাঃ, সাহাবীগণ বা তাদের যোগ্যতম উত্তরসূরীগণ যেভাবে তাবলীগ করেছেন, ঠিক সেভাবেই আমাদেরকেও তাবলীগ করতে হবে।

হজরত আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সৎ পথের দিকে আহ্বান করে সে ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হবে। এতে তাদের (যারা অনুসরণ করবে) সওয়াব থেকে কিছুমাত্র কম হবে না। আর যে ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহ্বান করে সেই ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গোনাহর ভাগী হবে। এতে তাদের গোনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না” (মুসলিম, ২৬৭৪)

আর তাবলীগের পথে চলতে গেলে যে বিপদ আসবেই সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা প্রয়োজন। কেননা, হক্কের কথা বলতে গেলে বাতিল ক্ষেপবেই এবং তার জন্য লাঞ্চণা যন্ত্রণা ভোগ করতে হবেই। প্রত্যেক নবী রাসুলকেই পৃথীবিতে এসে বাতিলের লাঞ্চণা যন্ত্রণা অত্যাচার ভোগ করতে হয়েছে। এ ব্যাপারে পবিত্র কোর’আন পাকে উল্লেখ হয়েছে, লোকমান (আঃ) তার পুত্রদের বলেছেন,
يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنكَرِ وَاصْبِرْ عَلَىٰ مَا أَصَابَكَ ۖ إِنَّ ذَٰلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ
“হে বতস, সৎকাজের আদেশ দান করো এবং অসৎকাজের নিষেধ করো, (এ কাজ করতে গিয়ে) তোমার উপর যে বিপদ আপতিত হবে তাতে ধৈর্য অবলম্বন করো, নিঃসন্দেহে সেটা সাহসিকতার কাজ” (সুরা লুকমান, ১৭)।

Facebook Comment