Time & Date::
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

অপরিহার্য হলো মডেল চরিত্র


মানুষের সামনে দ্বীনকে তুলে ধরার বড় হাতিয়ার বয়ান বা বক্তৃতা নয়, সেটি হচ্ছে আমল। নবীজী (সাঃ) বড় বড় ইজতেমা বা মাহফিল করেননি। দীর্ঘ বক্তৃতাও দেননি। জোর দিয়েছেন আমলে। নবীজীর (সাঃ) হিকমত হলো, উত্তম চরিত্রের মানুষ গড়া সে সাথে কোর’আনী শিক্ষার উপর সমাজ গড়া। এভাবে সফল জীবনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। সে সুন্দর ইসলামি সমাজ দেখে মানুষ তখন দলে দলে ইসলাম কবুল করে। এটাই তো ইতিহাসের শিক্ষা। মদীনার ন্যায় কয়েক হাজার মানুষের এক ক্ষুদ্র জনপদে ইসলামি রাষ্ট্র গড়া এখনকার লাখ লাখ মানুষ নিয়ে বছর বছর ইজতেমা করার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়েছিলোএটিই ইসলামের তাবলীগ ও প্রতিষ্ঠার পথ। কোর’আন শুধু আল্লাহর বিধান নিয়ে হাজির হয়নি, সে বিধানের সর্বশ্রেষ্ঠ মডেল নিয়েও হাজির হয়েছে। নবীজী (সাঃ) ও সাহাবাদের আমলে তো সেটাই ঘটেছিলো। ফলে ইসলাম গ্রহণে সেদিন জোয়ার শুরু হয়েছিলো। আজ সে বিধান আছে কিন্তু মডেল নেই। ফলে সে ইসলামের প্রতি সে জোয়ারও নেই। বরং শুরু হয়েছে ইসলাম থেকে দূরে সরার জোয়ার। আজকের মুসলমানদের এটিই সবচেয়ে দুর্বল দিক।

মুসলমানদের উপর আল্লাহর সাহায্য স্রেফ দোয়ার ডাকে আসে না। আসে আল্লাহর প্রদর্শিত সিরাতুল মুস্তাকিমটি সুন্দরভাবে আঁকড়ে ধরার উপর ভিত্তি করে। ফলে ফলে দোয়ার ইজতেমায় লাখ লাখ লোকের কান্নাকাটিতেও কোনো বিজয় আসছে না, শান্তিও আসছে না। বরং আধিপত্য বাড়ছে কাফের, ফাসেক, মুশরিক, মুনাফিকসহ নানারূপ দুর্বৃত্তদের। অথচ এ দোয়ার মাহফিলে শুধুমাত্র চমক আনার জন্যই তাবলীগী জামা’আতের মহা আয়োজন, নবীজী (সাঃ) প্রদর্শিত সিরাতুল মুস্তাকিম আঁকড়ে ধরায় নয়। তাদের মধ্যে আরেক বিচ্যুতি ঘটেছে তাবলীগের কাজকে শুধু মুসলমানদের মাঝে সীমিত রাখায়। এটিও নবীজীর (সাঃ) সুন্নাতের খেলাফ। ইসলাম শুধু মুসলমানদের ভালো মুসলমান বানানোর জন্য আসেনি বরং এসেছে অমুসলমানদের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত পৌছে দেয়ার জন্যও। একাজে তারা আল্লাহর খলিফা। মুসলমান হওয়ার এ এক বিশাল দায়বদ্ধতা। রাজা দাহিরের অত্যাচারি শাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কিছু দেশের স্থানীয় হিন্দুরা বসরার মুসলিম শাসকের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছিলো। মুসলিম সৈনিকেরা তাদের মুক্তি দিতে শুধু ওয়াজ নসিহত পেশ করেনি, অর্থ, শ্রম, সময় ও সংগ্রামও করেছিলো। ইসলামের প্রসার তো ঘটেছিলো এভাবেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, অমুসলমানদের প্রতি তাবলীগী জামা’আতের সে অঙ্গীকারটি কোথায়? বিনিয়োগটাই বা কি? তাদের ব্যস্ততা শুধু মুসলমানদের নামাজি বানানোর মাঝে। সেটিও কোর’আনী জ্ঞান ও সহিহ হাদিসের প্রতি জোর না দিয়ে। অমুসলমানদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌছানোর প্রচেষ্টা কই? প্রতিবেশি হিন্দু, খৃষ্টান বা বৌদ্ধদের মহল্লায় কি তারা দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে কখনো গাশতে নামেন? অথচ নবীজী (সাঃ) ও সাহাবাগণ আজীবন কাফেরদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। তাদের সে মেহনতের বরকতেই মদিনা থেকে বহু হাজার মাইল দূরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আমরা আজ মুসলিম। তাই প্রশ্ন, নবীজীর (সাঃ) সে মহান এই আমলটি তাদের কাছে গুরুত্ব হারালো কেন? আজ কি অমুসলমানদের সংখ্যা কম? তাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার প্রচেষ্টা কোথায়? কেয়ামতের দিন তারা যদি বলে, ‘হে আল্লাহ, তারা তো আমাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে কিছুই বলেনি, আমাদেরকে এ পথে আসার আহ্বানও করেনি’। তখন কি জবাব দেব আমরা?

Facebook Comment