১। আশ শিরক ফির রুবুবিয়্যাহঃ আর তা হচ্ছে আল্লাহর কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বে কাউকে তার সমকক্ষ মনে করা, অন্য কাউকে অংশীদার বানানো। আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, গায়েব বা অদ্দ্রিশ্যের খবর একমাত্র তিনিই রাখেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-ও গায়েবের খবর জানতেন না। (আল আরাফ, ১৮৮)
২। আশ শিরক ফিল উলুহিয়্যাহঃ ইবাদতে আল্লাহর
সাথে অন্য কাউকে শরীক করা। ইবাদত হতে হবে সম্পূর্ণ শিরকমুক্ত। আল্লাহ বলেন,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا
تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا
“তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তার সাথে কাউকে
শরীক করো না” (আন নিসা, ৩৬)।
ইবাদতে শিরক আবার দু’ প্রকারঃ ক) বড় শিরক ও
খ) ছোট শিরক
ক) বড় শিরকঃ আর তা হলো ইবাদতের প্রকারগুলোর
কোনো একটি প্রকার আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য করা। যেমন, আল্লাহ ব্যতীত অন্য
কারো কাছে দোয়া করা, সিজদা করা, মানত করা, মৃত ব্যক্তি, জ্বীন কিংবা শয়তানের
প্ররোচণাকে ভয় করা। আর বর শিরক কয়েক ভাগে সম্পাদিত হতে পারে।
অ) দাওয়াত বা হ্বানে শিরক। বিপদ আপদে
আল্লাহকে ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকা এ ধরণের শিরক। (সুরা আনকাবুত, ৬৫)
আ) আনুগত্যে শিরক। আল্লাহ ব্যতীত অন্য যে
কারো জন্য আনুগত্য প্রকাশ করা। (সুরা তাওবা, ৩১)
ই) ভালোবাসায় শিরক। মুমিনদের ভালোবাসা হবে
একমাত্র আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে আল্লাহর ন্যায় ভালোবাসা শিরক। আর
ভালোবাসার নিদর্শন হলো আল্লাহপাকের আদেশ নিষেধকে বাস্তবায়ন করা। (বাকারাহ, ১৬৫)
খ) ছোট শিরকঃ যেসব কথা ও কাজের মাধ্যমে
মানুষ শিরকের দিকে ধাবিত হয় সেসব কথা ও কাজকে ছোট শিরক বলা হয়। যেমন সৃষ্টির
ব্যাপারে এমনভাবে সীমালংঘন করা যা ইবাদতের পরযায়ে পৌছে যায়। ছোট শিরক মানুষকে
মুসলিম মিল্লাহ থেকে বের করে না; কিন্তু তাওহীদের ঘাটতি করে। আর উহা বড় শিরকের
একটি মাধ্যম।
ছোট শিরক আবার দু’ প্রকারঃ ক) প্রকাশ্য শিরক
ও খ) গুপ্ত শিরক
ক) প্রকাশ্য শিরকঃ ইহা কথা ও কাজের মাধ্যমে
সংঘটিত হয়। কথার শিরক হলো আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে শপথ করা (তিরমিজী, ১৫৩৫)।
কাজের মাধ্যমে শিরক হলো বিপদ দূর করার জন্য সুতা ও কড়া ব্যবহার করা, বদনজর থেকে
বাঁচার জন্য তাবীজ কবজ ঝুলানো (তিরমিজী; মিশকাত, ৪৫৫৬)।
খ) গুপ্ত শিরকঃ গুপ্ত শিরকের উদাহরণ দিয়ে
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “এ উম্মতের শিরক রাতের আঁধারে কালো পাথরের উপর কালো
পিঁপড়া পদচারণার চেয়েও গুপ্ত বা সুক্ষ্ণ” (সহীহুল জামে, ২৩৩)। আর এ ধরণের শিরক হলো
ইচ্ছা ও নিয়তের দ্বারা। যেমন লোকদেখানো ও সুখ্যাতি বা সুনামের জন্য কোনো কাজ করা।
৩) আশ
শিরক ফিল আসমা ওয়াস সিফাতঃ এই শিরক হলো আল্লাহর গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের সাথে
সৃষ্টির গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের তুলনা করা। যেমন এ ধরণের কথা বলা যে, আল্লাহর পা
আমাদের পায়ের মতো, আল্লাহর চেহারা অমুকের চেহারার মতো ইত্যাদি। আমরা আল্লাহকে
একমাত্র গাওছ বা ত্রাণকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করি। তাই আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে গাওছ
বলা এ জাতীয় শিরক। এ সকল শিরক থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।