Time & Date::
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

প্রচলিত তাবলীগ জামা’আতের সিলেবাস


একই মতবাদ ও বিশ্বাসের সকল মানুষ নিয়ে একটি দল তৈরি হয়। তাবলীগও একটা দল। তাদের মতবাদে বিশ্বাসী মানুষ তৈরি করতে তাদের একটা নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে যা সকল তাবলীগীদের পাঠ্যবই। কিন্তু এগুলোতে কিছু কোর’আন ও হাদিস শিক্ষা থাকলেও এসব বইয়ে অনেক কথা আছে যা সরাসরি কোর’আন ও সহিহ হাদিসের সাথে সংঘর্ষশীল ও অপব্যাখ্যায় ভরপুর। পরবর্তি অধ্যায়ে তা আলোচনা করা হয়েছে।

তাবলীগীদের সিলেবাসঃ
১। ফাজায়েলে আমল যার খন্ড আটটি যথা ফাজায়েলে নামাজ, ফাজায়েলে তাবলীগ, ফাজায়েলে যিকির, ফাজায়েলে কোর’আন, ফাজায়েলে রমজান, ফাজায়েলে দরূদ ও হেকায়েতে সাহাবা।
২। ফাজায়েলে সাদাকাত, ২ টি খন্ড।
তাদের খাস বইও দুইটি; যেমন,
১। হায়াতুস সাহাবা।
২। রিয়াদুস সালেহিন।

উল্লেখ্য, আরবরা যেহেতু দুর্বল, জাল হাদিস বা কেচ্ছাকাহিনী (যা ফাজায়েলে আমল বইতে আছে) বিশ্বাস করেনা, তাই আরব দেশগুলোতে এর পরিবর্তে ইমাম নবভী রচিত ‘রিয়াদুস সালেহিন’ পড়ানো হয়। তাছাড়া, পৃথিবীর অনেক ভাষায় ‘ফাজায়েলে আমল’ বইটি অনুবাদ হলেও আরবী ভাষায় এর অনুবাদ করা হয়নি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এ সমস্ত বইয়ের কোথাও আল্লাহর তাওহীদ, ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শিরক, বিদ’আত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়নি। অথচ এগুলোকে জানাই হচ্ছে মুসলিমদের আবশ্যিক কর্তব্য। আর এসব বইতে এতসব কেচ্ছাকাহিনীর কোনো দরকার ছিলো? যেখানে মানুষ শিরক, বিদ’আত সম্পর্কে জানেনা, হালাল হারাম জানেনা, সেখানে কি প্রয়োজন ছিলো এতসব জগাখিচুরী গল্প নিয়ে আলোচনা করার? আর দিনরাত বিভিন্ন আমল করার সাথে সাথে যদি কেউ শিরক, বিদ’আতও করে, তাহলে তার আমল কি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য?

তাদের সিলেবাসে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়ঃ
এখানে কোর’আনের কোনো তাফসীর গ্রন্থ নেই। তাবলীগীরা কখনো কোর’আনের অনুবাদ ও এর তাফসীর অধ্যয়ন করেনা। তাবলীগের মুরুব্বিরা কোর’আনকে শুধু আরবীতে পড়ে অনেক ফায়দা হাসিলের দাওয়াত দিলেও তারা সাধারণ মানুষকে অর্থ ও তাফসীরসহ কোর’আন বুঝার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে। তাদের অনেকেই বলেন, মুফতি, কারী বা আলেম নাহলে বা ১৫টি বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে কোর’আন বুঝা উচিৎ নয়। আবার কেউ কেউ বলেন, আরবী ভাষায় পান্ডিত্য না থাকলে কোর’আনের অর্থ বা তাফসীর পড়া ঠিক নয়। নবীজী (সাঃ) কোথাও কি এভাবে বলেছিলেন? সাহাবীদের অনেকেই তো পুরো কোর’আনী হাফিজ ছিলো না, তাদের অনেকের লেখাপড়াও তো খুব বেশি ছিলো না। আল্লাহপাক বলেন,
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِن مُّدَّكِرٍ
“আমি বুঝার জন্য কোর’আনকে সহজ করে দিয়েছি, কেউ কি বুঝতে চায়?” (সুরা ক্কামার, ৩২)।

আল্লাহপাক আরও বলেন,
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا
“তারা কোর’আন নিয়ে কেন গবেষণা করেনা? তাদের অন্তরে কি তালা লেগে গেছে?” (মুহাম্মদ, ২৪)।

তারা নবীর সুন্নাতী পোষাক পরে নবীওয়ালা কাজ করছে দাবী করে। কিন্তু কোর’আনের পরে ইসলামের মূলভিত্তি সহিহ হাদিসগ্রন্থ থেকে তেমন হাদিস তাদের সিলেবাসে নেই এবং এগুলো পড়তেও তারা উৎসাহ দেয়না। তাদের সিলেবাসে শিরক, বিদ’আত, হালাল হারাম, সুদ ঘুষ ইত্যাদি সম্পর্কে কোনো হাদিস নেই। তাই তাবলীগ কর্মীদের বেশিরভাগ লোকই শিরক, বিদ’আত, হালাল হারাম, সুদ ঘূষ সম্পর্কে তেমন জানেনা। তারা আল্লাহর তাওহীদ নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করেনা। ফলে দেখা যায় আল্লাহর ভীতি তাদের মনে খুব কম প্রভাব বিস্তার করে। এমনকি বাজার বন্দরে দেখা যায় তারাই বিভিন্ন সূদী কোম্পানিতে টাকা রাখছে, লটারী কাটছে, হালাল হারাম বাছবিচার করছেনা ইত্যাদি।

আর ফাজায়েলে সিরিজের বইগুলো মাওলানা ইলিয়াস সাহেব ও হায়াতুস সাহাবা বইটি ইলিয়াসপুত্র ইউসুফ কান্ধল্ভী দ্বারা রচিত। পিতাপুত্রের একই ভাব ও নির্দিষ্ট মতাদর্শে লিখিত বইগুলোই শুধু তাদের জ্ঞানের উৎস। তাদের সিলেবাসে লক্ষ্য করে দেখবেন যে সংগ্রাম আন্দোলন বা জেহাদ সম্পর্কে কোনো বই নেই। তারা সুকৌশলে মানুষকে এগুলো থেকে দূরে রেখে পরকাল ও দোয়া যিকিরনির্ভর ইসলাম প্রচারে ব্যস্ত। কিন্তু রাসুল (সাঃ)-এর জীবনী থেকে দেখা যায় তিনি আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াতও দিয়েছেন সাথে আন্দোলন সংগ্রাম বা যুদ্ধও করেছেন। সাহাবীরাও কি শুধু নামাজ যিকির করেই তাদের জীবন পার করে দিয়েছেন, না ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করে তাদের জীবন দান করেছেন? তাদের মত হলো নামাজ, রোজা, যিকির করবো কিন্তু আন্দোলন প্রতিবাদ করবো না।

Facebook Comment