Time & Date:: 08:51:24 AM Saturday 26-04-2025
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

এরকম একটি জামা’আত তৈরি হবে নবীজীর (সাঃ) ভবিষ্যৎবাণী


সাহাবী আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “আমার মৃত্যুর পর শেষ জামানায় আমার উম্মতের মধ্য হতে পূর্বের কোনো দেশ হইতে একটি জামা’আত তাবলীগ নামে বের হবে, তারা কোর’আন পাঠ করবে, তাদের কোর’আন পাঠ তোমাদের কোর’আন পাঠের তুলনায় খুবই সুন্দর হবে। কোর’আনের প্রতি বাহ্যত তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা দেখে মনে হবে যেন ওরা কোর’আনের জন্য কোর’আন ওদের জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওরা কোর’আনের প্রতিটি আয়াতের উপরে ঈমান রাখবে না এবং কোর’আনের কঠিন নির্দেশের উপর আমল করবে না।”

“এই জামা’আতের অধিকাংশ লোক হবে অশিক্ষিত ও মূর্খ। যেমন কোর’আন ও হাদিসের জ্ঞানে হবে মূর্খ তেমন সাধারণ জ্ঞানেও হবে মূর্খ। এই জামাতে যদি কোনো শিক্ষিত লোক যোগদান করে তাহলে তার আচরণ ও স্বভাব হয়ে যাবে জামাতে যোগদানকারী অন্যান্য মূর্খের মতো। মূর্খরা যেমন মূর্খতার আনুগত্য করবে তেমনি শিক্ষিত লোকটিও মূর্খদেরই আনুগত্য করবে। এই জামা’আতের বয়ান ও বক্তৃতায় থাকবে কেবল ফজিলাতের বয়ান। বিভিন্ন আমলে সর্বোচ্চ ফজিলাতের প্রমানহীন বর্ণনাই হবে তাদের বয়ানের বিষয়বস্তু”।

“হে মুসলমানগণ! ঐ লোকদের নামাজ, রোজা ও অন্যান্য আমল এতই সুন্দর হবে যে, তোমরা তোমাদের নামাজ, রোজা ও আমলসমূহকে তাদের তুলনায় তুচ্ছ মনে করবে। এই জামা’আতের লোকেরা সাধারণ মানুষকে কোর’আনের পথে তথা দ্বীনের পথে চলার নামে ডাকবে, কিন্তু তারা চলবে তাদের তৈরি করা পথে, ডাকলেও তারা কোর’আনের পথে চলবে না”।

“তাদের ওয়াজ ও বয়ান হবে মধূর মতো মিষ্টি, ব্যবহার হবে চিনির মতো সুস্বাদু, তাদের ভাষা হবে সকল মিষ্টির চাইতে মিষ্টি। তাদের পোষাক পরিচ্ছদ ধারণ হবে খুবই আকর্ষনীয়, যেমন সুন্দর হরিণ তার হরিণীর পিছনে ছুটতে থাকে তেমন সাধারণ মানুষ তাদের মিষ্ট ব্যবহার, আমলের প্রদর্শনী ও সুমধূর ওয়াজ শুনে তাদের জামা’আতের দিকে ছুটতে থাকবে”।

“তাদের অন্তর হবে বাঘের মতো হিংস্র। বাঘের অন্তরে যেমন কোনো পশুর চিৎকার মমতা প্রকাশ করেনা, তেমন কোর’আন ও হাদিসের বাণী যতই মধূর হোক তাদের অন্তরে প্রবেশ করবে না। তাদের কথাবার্তা, আমল, আচরণ, বয়ানগুলি তারা তাদের জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে। তার ভিতরকার কোর’আন সুন্নাহ বিরোধী আমলগুলো বর্জন করে কোর’আন সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার জন্য যতোবার কেউ কোর’আন সুন্নাহ প্রদর্শন করুক বাঘের অন্তরে যেমন মমতা প্রবেশ করেনা তেমন তাদের অন্তরে কোর’আন ও সুন্নাহ প্রবেশ করবেনা”।

“তাদের জামাতে প্রবেশ করার পর তাদের মিষ্টি ব্যবহারে মানুষ হবে মুগ্ধ, কিন্তু ঐ মনোমুগ্ধ ব্যবহারের পেছনে জীবন ধ্বংসকারী, ঈমান বিনষ্টকারী, ইসলামি মূল্যবোধ বিনষ্টকারী মারাত্মক বিষ বিরাজমান থাকবে। তাদের প্রশিক্ষণ ধীরে ধীরে মানুষের অন্তর হতে আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ)-এর আনুগত্যের প্রেরণা শেষ করে দেবে এবং জামা’আতের আমীরদের আনুগত্যের প্রতি মরণপণ আকৃষ্ট করবেআমীরগণ দেখতে হবে খাঁটি পরহেজগার দ্বীনদার ব্যক্তিদের মতো কিন্তু তার অন্তর হবে শয়তানের মতো, কোর’আন সুন্নাহের প্রতি বিদ্রোহী। আমীরগণ যা করে যাচ্ছে তার মধ্যে কোর’আন সুন্নাহ বিরোধী কোনো কাজ কখনো কেউ ধরিয়ে দিলে কোনোক্রমেই তা পরিবর্তন করতে প্রস্তুত হবেনা। অর্থাৎ কোর’আন হাদিস উপস্থাপন করার পর তারা কোর’আন হাদিস বর্জন করে মুরুব্বীদের কথা মানবে। কোর’আন হাদিসের প্রতি তাদের অনীহা এতোই তীব্র হবে যে, তারা অর্থসহ কোর’আন হাদিস কখনোই পড়বে না, পড়ানোও যাবেনা”।

“এই জামা’আতটি ইসলামের তাবলীগ করার কথা যতোই বলুক কর’আন যতো সুন্দরই পাঠ করুক, নামাজ রোজা যতোই সুন্দর হোক, আমল যতোই চমৎকার হোক, মূলতঃ ঐ জামা’আতটি ইসলাম হতে বহির্ভূত হবে। সাহাবাগণ (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) ঐ দলটি চিনবার সহজ উপায় কি হবে? আমাদিগকে জানিয়ে দিন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, এই ইসলাম বহির্ভূওত জামা’আতটি চিনবার সহজ উপায় হলো-
ক) তারা যখন তালীমে বসবে, গোল হয়ে বসবে।
খ) অল্প সময়ের মধ্যে এই জামা’আতের লোকসংখ্যা খুব বেশি হবে।
গ) এই জামা’আতের আমীর ও মুরুব্বীদের মাথা নেড়া হবে, তারা মাথা কামিয়ে ফেলবে।

তীর মারলে ধনুক থেকে তীর বের হয়ে যায়। ঐ তীর আর কখনো ধনুকে দিকে ফিরে আসেনা। তেমন যারা এই জামাতে যোগদান করবে তারা কখনো আর দ্বীনের দিকে ফিরে আসবেনা। অর্থাৎ এই জামা’আতকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য কোর’আন হাদিস যতো দেখানো হোক, যতোই চেষ্টাই করা হোক নাকেন দলটি সঠিক দ্বীনের প্রতি ফিরে আসবেনা। এদের সাথে তোমাদের যেখানেই সাক্ষাৎ হোক সংগ্রাম হবে তোমাদের অনিবার্য। এই সংগ্রাম যদি কখনো যুদ্ধে পরিণত হয় তাহলে তা থেকে পিছপা হবেনা। এই সংগ্রামে বা যুদ্ধে যারা মৃত্যুবরন করবে, তাদেরকে যে পুরষ্কার আল্লাহ দান করবেন তা অন্য কোনো নেক কাজে দান করবেন না”।

তথ্যসূত্রঃ
(বুখারী, আরবী দিল্লী ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২৪,১১২৮; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, আরবী ১ম খন্ড, পৃঃ ১৩৮; আবু দাঊদ, আরবী দিল্লী ২য় খন্ড, পৃঃ ৬৫৬; তিরমিজী; মিশকাত, আরবী ২য় খন্ড, পৃঃ ৪৫৫; মুসলিম, আরবী ২য় খন্ড, পৃঃ ৪৬২)

হাদিসসমূহের বর্ণনাকারী হলেন আবু সাঈদ খুদরী, আলী, আবু হুরায়রা, আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) (দেখুনঃ সহিহ আল বুখারী ৬ষ্ট খন্ড, ৬৪৪৯, ৬৪৫০, ৬৪৫২, ৭০৪১ (আ.প্র.), বাংলা অনুবাদ মুয়াত্তা মালেক, ই.ফা. ১ম খন্ড, ৫৭৮)

Facebook Comment