Time & Date::
আসসালামু আলাইকুম। ভিজিট করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।। এই ওয়েব ব্লগটি সকল মুসলিম ভাইবোনদের জন্য উৎসর্গ করা হলো আলহামদুলিল্লাহ। অনুগ্রহ করে নিয়মিত চোখ রাখুন।। কারও কোনো জিজ্ঞাস্য থাকলে অনুগ্রহ করে নিচে 'যোগাযোগ' লিংকে ক্লিক করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

কোর'আন ও হাদিসের আলোকে তাবলীগ ও প্রচলিত তাবলীগ


সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা ও প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামীনের। দরুদ ও সালাম তার প্রেরিত নবী মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। সারা বিশ্বে কোটি কোটি মুসলমান থাকলেও সর্বত্র মুসলমান্দের মধ্যে তাওহীদের সঠিক আকিদা বিশ্বাস অবর্তমান। বর্তমান সময়ে মুসলমানগণ নানা ধরনের ভ্রান্ত আকিদা বিশ্বাসে নিমজ্জিত। তাদের সামনে শিরক, শিরকের বাহন, বিদা’আত ও তার কুফল এবং খালেস তাওহীদের সঠিক আকিদা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা প্রয়োজন। আমি ব্যক্তিগতভাবে ডিগ্রীধারী কোনো আলেম নই বা প্রসিদ্ধ কোন লেখকও নই। কিন্তু সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন শিরক, বিদা’আত, খালেস তাওহীদের সঠিক আকিদার অভাব, প্রচলিত তাবলীগ জামা’আতের কিছু ভ্রান্ত নীতি লক্ষ্য করে এই পুস্তিকাটি সম্পাদনা করতে মনস্থ করি। বিশেষ করে সৌদি আরবের রাবওয়া রিয়াধে অবস্থিত ‘ইসলাম প্রচার ব্যুরো’-র প্রায় পাঁচ শতাধীক ও বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক বই পড়ে জ্ঞানার্জন করার চেষ্টা করি। তাতে আমাদের সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন শিরক, বিদ’আতগুলি চোখে পড়ে। সৌদি আরবের ‘ইসলাম প্রচার ব্যুরো’ হলো বিশ্বের বৃহত্তম ইসলাম প্রচার সংস্থা যা বর্তমান বিশ্বের প্রায় ২০০ টিরও বেশি ভাষায় ইসলাম প্রচার করে আসছে।

ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ জীবনাদর্শ। এখানে বাড়াবাড়ি বা সীমালংঘনের কোন স্থান নেই। আল্লাহপাক বলেন, “দ্বিনের মধ্যে কোন বাড়াবাড়ি নেই” (বাকারাহ, ২৫৬)। তাই মানব জীবনে বাড়াবাড়ি ইসলামে পছন্দনীয় নয়। সেটা ইবাদতের ক্ষেত্রে হোক, আকিদার ক্ষেত্রে হোক কিংবা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের যেকোন ক্ষেত্রে হোক না কেন বাড়াবাড়ি কোন অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য নয়। কিন্তু মানুষ অধিক তাকওয়া ও পরহেযগারিতা অর্জনের লক্ষ্যে কিংবা ইবাদতের ক্ষেত্রে সাধ্যাতীত প্রচেষ্টা চালাতে চায়। এটা ইসলামে আদৌ কাম্য নয়। মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর” (তাগাবুন, ১৬)। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)বলেন, “আমি যখন তোমাদের কোন নির্দেশ দেই, তখন তোমরা তা সাধ্যানুযায়ী প্রতিপালন কর” (বুখারী, কিতাবুল ই’তিসাম হা/৭২৮৮)।

সুতরাং আমলে-আখলাকে, ইবাদত-বন্দেগীতে, চাল-চলনে সর্বক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি পরিহার করে সাধ্যমত মধ্যপন্থা অবলম্বনের চেষ্টা করতে হবে। সাধ্যের বাইরে নফল ইবাদত করতে গিয়ে মানুষ একসময় ফরজ প্রতিপালনে অপারগ হয়ে পড়ে। অনুরুপভাবে সামর্থের অতিরিক্ত দান-সাদাকা করতে গিয়ে মানুষ দেউলিয়া হয়ে যায়। ফলে জীবন ধারণের জন্য অপমানজনক পথ অবলম্বন করতে হয়। যেটা মোটেই কাম্য নয়। মহান আল্লাহ বলেন, “কাউকে তার সামর্থ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয় না” (বাকারাহ, ১৩৩)। তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কাজের ভার দেন না” (বাকারাহ, ২৮৬)। তাই মানুষকে সাধ্যানুযায়ী কাজ করতে হবে। আলোচ্য পুস্তিকায় সে বিষয়ে দিকনির্দেশনাও রয়েছে। আমি সাধ্যমতো কোর’আন ও হাদিসের সঠিক তথ্যসূত্র দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরেও ভূল যে হবেনা তা নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। পাঠকের কাছে ভুলটি জানতে পারলে কৃতজ্ঞ হবো।

একাজে আমাকে যারা সহযোগীতা করেছেন তাদের কাছে আমি খুবই কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে সৌদি আরবের ‘ইসলাম প্রচার ব্যুরো’-কে এবং বিশ্বের ২০০ টিরও বেশি ভাষায় সঠিকভাবে অনুদিত শক্তিশালী ইসলামিক কোর’আন সফটওয়্যার ‘জেকর’-কে। এজন্য বাংলা ভাষাভাষী জনগণকে দ্বীনের ব্যাপারে সীমালংঘন ও বাড়াবাড়ি থেকে মুক্ত রাখতে এবং তাদেরকে ইসলামী বিধান যথাযথ পালনের দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে বইটির সম্পাদনা করতে মনস্থ করি, তাই এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। বইটি পাঠকের উপকারে আসলে আমাদের শ্রম সার্থক হবে। আর এর উত্তম প্রতিদান আল্লাহর কাছে কামনা করছি। আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্টা কবুল করুন। (আমীন)।

                                                                                      এম. রৌশন আলী
                                                                                      ১২/১২/২০১২ ইং


Facebook Comment